শরীর মালিশ শুনলেই কেমন যেন একটা শান্তির বাতাস বয়ে যায় শরীর দিয়ে। আর সারা দিন পরিশ্রমের পরে যদি হালকা গরম তেল দিয়ে একটু মালিস করিয়ে নেওয়া যায় তাহলে তার জুড়ি মেলা দায়। আমাদের দেশে কিছু বড় বড় পার্লারে এরকম মালিশের ব্যাবস্থা থাকলেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে থাকা সেলুনের একটু মালিশ কিন্তু বেজায় মন্দো না। বেশ ভালই লাগে কি বলেন? যা হোক এখন মূল কথায় ফেরা যাক। আজকের লেখাটাও শরীর মালিশ নিয়ে তবে একটু ভিন্ন রকম বা ভয়ংকর বললেও ভূল হবে না।
দক্ষিন ইসরাইলের একটি ছোট গ্রাম "তালমা ইলাজার", আর এই ছোট গ্রামের একটি ছোট শরীর মালিশ পার্লার যার নাম "ফার্ম কার্নিভার্স প্লান্টস"। কিন্তু সবাই এখানে যাবার সাহস পায় না!! কেন ভাবছেন?? কারন এই পার্লারে শরীর মালিশ কোন মানুষ করে না, করে "সাপ"। এখানে শরীর মালিশের জন্য ব্যাবহার করা হয় কিছু নিরিহ প্রজাতির সাপ বা বলা যায় যে সকল সাপের বিষ নেই। আর এই সব সাপের মধ্যে রয়েছে, কিং সাপ, দুধ সাপ আর স্পটেট সাপ। সাপ যতই নিরীহ হোক না কেন, এই মালিশ পার্লারে যাওয়ার আগে শুধু যে সাপের ভয় দূর করতে হবে তাই না একই সাথে সাপদের প্রতি ঘৃনাবোধ এবং নোংরা বোধটাও আপনাকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। কেননা মালিশ করার সময় সাপেরাতো আর আপনাকে জামা কাপড় পরিয়ে মালিশ করিয়ে দিবে না।
এবার আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব এই মালিশ পার্লারের মালিকের সাথে। এনার নাম "আডা বারাক"। উনি এই পার্লারের একমাত্র মালিক। এমন কি এই উপায়ে শরীর মালিশ করার পদ্ধতিও তার আবিস্কার করা। এটা তিনি আবিস্কার করেন অনেকটা নিজের অজান্তে। তার নিজের পোষা একটি সাপ তার পিঠে উঠে যায় এবং তিনি অনুভব করেন যে এটা অন্যরকম এক আনন্দের মালিশ। আর এখান থেকেই তার মাথায় চলে আসে এই বুদ্ধি আর কি ছোট খাট একটা সাপের খামার খুলে বসেন আর সাথে পার্লার। এ নিয়ে আডা বলেন, "তাকে অনেকেই বলেছে সাপ দিয়ে শরীর মালিশ সত্যিই এক অন্য রকম অনুভূতি।" যদিও আডার দাবি এই পদ্ধতির আবিস্কারক তিনি, কিন্তু একটু ইতিহাসে গেলেই দেখা যাবে সাপের সাহায্যে এরকম শরীর মালিশ বেশ পুরাতন প্রথা। বিষেশ করে যে সকল জাতি সাপের পূজা আর্চনা করত।
আডা এর ভাষ্য মতে, লম্বা সাপ গুলি একটু বেশী কার্যকর। সাপ যত বড় হবে তত ভাল নাকি কাজ করবে এটি। এই পার্লারের যে শুধু মাত্র এই কারনে নাম করেছে তা নয়, আরেকটি কারনেও এই পার্লার বেশ বিক্ষাত আর তা হল এর সংরক্ষনে থাকা বেশ কয়েকটি দূর্লভ প্রজাতির মাংসাশী গাছ। এখানে গেলে আপনি চাইলে নিজ হাতে এই সব মাংসাশী গাছদের খাওয়াতেও পারবেন। সেই ব্যাবস্থাও রেখেছেন আডা। কি ভাবছেন কোন পাগলে যাবে সাপ দিয়ে শরীর মালিশ করতে?? ভাবতেই পারেন কিন্তু বাস্তবতা হল এটি বর্তমানে দক্ষিন ইসরাইলের একটি নাম করা পর্যটন কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। বিদেশ থেকে আসা অনেক পর্যটন যেমন আসে এখানে তেমনি দেশি লোকের অভাব পরে না। আর মালিশ করাতে একটু আগের থেকেই আপনাকে বুকিং দিতে হবে। তা না হলে লাইনে বসে বসে আপনাকে ঝিমাতে হবে আর তা না হলে মাংসাশী গাছ গুলাকে মাছি ধরে ধরে খাওয়াতে হবে। কি যাবেন নাকি একবার? যদি ইসরাইল কোন দিন যাওয়া হয় তাহলে একবার অভিজ্ঞতার খাতিরে ঘুড়ে আসাই যায় কি বলেন। অন্তত্য দেশে ফিরে সবাইকে ছবি দেখিয়ে বলতে পারব, "দেখ আমি কত সাহসি, সাপ আমার শরীর মালিশ করে দেয়"।
Disclaimer:
This post might be introduced by another website. If this replication violates copyright policy in any way without attribution of its original copyright owner, please make a complain immediately to this site admin through Contact.
No comments:
Post a Comment