আমেরিকায় ইসরাইলি গুপ্তচরবৃত্তি অব্যাহত
থাকায় মার্কিন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন সাপ্তাহিকী নিউজ ইউকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকার
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইসরাইলি গুপ্তচরবৃত্তির বিষয়ে এক বৈঠকে ইসরাইলের এ
ধরণের তৎপরতাকে রেড লাইন হিসেবে অভিহিত করেছেন। সাপ্তাহিকীতে আরো লেখা
হয়েছে, ইসরাইল আমেরিকায় বাণিজ্য ও যৌথ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ক্ষেত্রে
সহযোগিতার নামে গুপ্তচরবৃত্তি করছে। এমনকি ইসরাইল জার্মানি, ফ্রান্স,
ব্রিটেন ও জাপানেও গোয়েন্দাবৃত্তির কাজ করছে।
আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, ইসরাইল আমেরিকার
সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইসরাইলের সমর্থন ধরে রাখার জন্য ওয়াশিংটন এ
পর্যন্ত ইসরাইলের পেছনে অঢেল অর্থ ব্যয় করেছে। কিন্তু তারপরও ইসরাইলিরা
মার্কিন ভূখণ্ডে গোয়েন্দাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে ১৯৫০ ও ৬০ এর
দশকেও আমেরিকায় ইসরাইলি গুপ্তচরের ঘটনা নিয়ে হৈ চৈ পড় গিয়েছিল।
বর্তমানে আমেরিকায় ইহুদিবাদী লবির প্রভাব থাকায় ইসরাইলি কর্মকর্তারা
তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা আরো জোরদার করেছে।
গত কয়েক দশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইসরাইলের
সঙ্গে আমেরিকার ব্যাপক সহযোগিতা গড়ে উঠেছে এবং তেলআবিবের সঙ্গে তথ্য
বিনিময়ও চলছে। যেমন আমেরিকা স্পর্শকাতর ও অত্যাধুনিক যেসব অস্ত্র আরব
দেশগুলোর কাছে বিক্রি করেছে সেসব বিষয়ে সমস্ত তথ্য ইসরাইলকে সরবরাহ করেছে।
এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আমেরিকার গোয়েন্দা তথ্যও তেলআবিবকে
সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও মার্কিন সরকারের হাতে এমন কিছু অতি
গোপনীয় তথ্য রয়েছে যা তারা কখনোই কোনো মিত্র দেশ এমনকি ইসরাইলকে জানায়
না। এ সব অতি গোপন তথ্য সংগ্রহের জন্য ইসরাইল আমেরিকায় গুপ্তচরবৃত্তি
করছে।
এর মধ্যে ইসরাইলের হয়ে আমেরিকায় জনাথন
পুলারদের গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনার কথা উল্লেখ করা যায়। জনাথন যখন মার্কিন
নৌবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্ব ছিলেন তখন তিনি এক ইসরাইলি সেনার
মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তেলআবিবে স্থানান্তর করেছিলেন। বলা হচ্ছে,
আমেরিকা থেকে চুরি করা এসব গোপন তথ্য ইসরাইলি কর্মকর্তারা সাবেক সোভিয়েত
ইউনিয়নকে দিয়েছিল যাতে এর বিনিময়ে মস্কো হাজার হাজার ইহুদিকে ইসরাইলে
অভিবাসনের জন্য অনুমতি দেয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জনাথন পুলারদের
গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরও আমেরিকার বাণিজ্য, শিল্প ও
প্রতিরক্ষা খাতে ইসরাইলের গোয়েন্দাবৃত্তি থেমে নেই। গত কয়েক বছরে বহুবার
বলা হয়েছে, ইসরাইল আমেরিকার শিল্প ও প্রযুক্তি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
চুরি করে নিয়ে গেছে যাতে আমেরিকার সমমানের পণ্য ইসরাইলেও তৈরি করা যায়।
এর ফলে এখন পর্যন্ত আমেরিকার ক্ষতির কোনো খবর প্রকাশিত না হলেও দেশের
আর্থ-রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে ইসরাইলের ব্যাপক প্রভাবের কারণে আমেরিকা এ
পর্যন্ত অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
৭ মে (রেডিও তেহরান)
No comments:
Post a Comment