বিদ্যুৎ ও জৈব জ্বালানি ছাড়াই ব্যাটারির সাহায্যে ভূগর্ভ থেকে সেচ কিংবা গৃহস্থালির কাজে পানি উত্তোলন, বৈদ্যুতিক ফ্যান চালানো, বাল্ব জ্বালানো ও অটোগাড়ি চালানো যাবে। এমনই এক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তার বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আহম্মদপুর গ্রামে। তিনি দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন।
নজরুল ইসলাম তার নতুন উদ্ভাবিত যন্ত্রের নাম দিয়েছেন ‘পাওয়ার বক্স’। এতে কোনো বিদ্যুৎ কিংবা জ্বালানির প্রয়োজন নেই। পাওয়ার বক্স চললেই নিজে থেকেই ব্যাটারি চার্জ হবে। তিনি নিজ বাড়িতে তার উদ্ভাবিত যন্ত্র দ্বারা বাড়ির বৈদ্যুতিক ফ্যান, বাল্ব, রঙিন টিভি এবং পানি উত্তোলন করে দেখিয়েছেন। এতে কোনো বিদ্যুৎ, ডিজেল ও পেট্রলের প্রয়োজন নেই। পাওয়ার বক্স চললেই ব্যাটারি চার্জ হবে।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আজ থেকে ১০ বছর আগে চিন্তা করেছি এ ধরনের পাওয়ার বক্স উদ্ভাবন করব। কিন্তু আর্থিক সঙ্কট ও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিলম্ব হয়েছে। অবশেষে গত দুই বছরের চেষ্টার ফলে আমার স্বপ্নের এই পাওয়ার বক্স উদ্ভাবন করতে সম হয়েছি। আর গত ২৪ মে উপজেলা সদরের শাহদৌলা ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ার বক্স যন্ত্রের সফল পরীা করে দেখিয়েছি।’
তিনি আরো জানান, এই পাওয়ার বক্সের মাধ্যমে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন, ব্যাটারি চার্জ, ফ্যান চালানো, বাল্ব জ্বালানো, রঙিন টিভি ও ফ্রিজ চালানোসহ ৮-১০ বিঘা জমিতে সেচের মাধ্যমে আবাদ করা যাবে। এ ছাড়া অটোগাড়ি চলবে এবং ব্যাটারিতে বৈদ্যুতিক চার্জ লাগবে না। ব্যাটারি ওই পাওয়ার বক্সের মাধ্যমেই অটো চার্জ হবে এবং অন্য গাড়ির ব্যাটারিও চার্জ করা যাবে। ব্যাটারি দীর্ঘ মেয়াদে চলবে ও এতে বাড়তি কোনো খরচ হবে না।
তিনি আরো জানান, এ প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার কাজকে সহজ সাশ্রয়ী এবং লাভজনক করে তুলবে। এই প্রযুক্তিটি অটোগাড়ি চালকেরা যথাযথভাবে ব্যবহার করে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি সেচসমস্যা সমাধানেও ভূমিকা রাখবে। তিনি দেশের স্বার্থে সহজ এই প্রযুক্তিটি কৃষক ও অটোগাড়ি চালকদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে দেয়ার পরামর্শ দেন। সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা পেলে এই প্রযুক্তির প্রচার ও প্রসারসহ নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন মনে করেন তিনি।
নজরুল ইসলাম বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ী এ প্রযুক্তিতে চারটি বিভিন্ন ভোল্টের ব্যাটারি, একটি করে ডিসি মোটর, হাইস্পিড জেনারেটর, বেল্ট, পুলি, শ্যাফ্ট এবং প্রয়োজন মতো বৈদ্যুতিক কেবল ব্যবহার করা হয়েছে। এতে সাকুল্যে এতে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। মাঝে এক ঘণ্টা করে বিরতি দিয়ে দিনে ২০ ঘণ্টা চালানো যাবে এ প্রযুক্তি। গবেষণার মাধ্যমে একে আরো সাশ্রয়ী ও টেকসই করা সম্ভব। তখন দাম আরো কম হবে।
Disclaimer:
This post might be introduced by another website. If this replication violates copyright policy in any way without attribution of its original copyright owner, please make a complain immediately to this site admin through Contact.
No comments:
Post a Comment