মিয়ানমারের রণসজ্জা,সীমান্তে গোলাগুলি : আতঙ্কে এলাকাবাসী




বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি সীমান্তে বিজিবি ও মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে গতকাল আবারো প্রচণ্ড গুলিবিনিময় হয়েছে। দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই গুলিবিনিময়ে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। গত বুধবার মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যদের গুলিতে নিহত হন বিজিবির নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান। গতকাল তার লাশ ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে উল্টো গুলি বর্ষণ করে বিজিপি। বর্তমানে মিয়ানমার তার সীমান্তে ব্যাপক সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়ে রণপ্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। মংডু শহরের বলিবাজার, ফকিরাবাজার, ওয়ালিদং, তুমব্রু ও ঢেঁকিবুনিয়া সীমান্ত এলাকার ১ নম্বর ও ২ নম্বর সেক্টরে মিয়ানমার অতিরিক্ত সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে। সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় অঘোষিত কারফিউ চলছে। এ পরিস্থিতিতে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজনের মধ্যে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। ফলে উভয় দেশের সীমান্ত এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়েছে। আতঙ্কে পাইনছড়ি এলাকার আশপাশের পাড়াগুলোর লোকজন নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।



বেলা ৩টা ২০ মিনিটের সময় পাইনছড়ি সীমান্তের ৫২ নম্বর পিলারের কাছে বিজিবির একটি টহল দল আগের দিন বিজিপির অতর্কিত গুলিবর্ষণের পর থেকে নিখোঁজ নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানের লাশ নিতে গেলে বিজিপি সদস্যরা অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টাগুলি চালায়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে গুলিবিনিময়। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিজিপির আবারো গুলিবর্ষণের পর পাইনছড়ি সীমান্তে বিজিবির শক্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ির ইউএনও আবু সাফায়েত মো: সহিদুর রহমান সীমান্তে গুলি বিনিময়ের কথা স্বীকার করে বলেছেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।



বিজিবি ও দোছড়ির স্থানীয় সূত্র জানায়, বিজিবির নিখোঁজ নায়েক সুবেদারের লাশ নেয়া জন্য বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গতকাল বেলা ৩টানাগাদ সীমান্তের ৫০ নম্বর পিলার এলাকায় সাদাপতাকা নিয়ে অবস্থান নেন। পরে ৫২ নম্বর পিলারের স্থানে বিজিপির পক্ষ থেকে লাশ হস্তান্তর করা হবে জানালে বিজিবির একটি দল সেখানে যাওয়ার পথে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা অতর্কিত গুলিবর্ষণ শুরু করে। বিজিবির একটি সূত্র জানায়, মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। হামলায় ৮৫ ও ৬০ মি: মি: অস্ত্রসহ ভারী মেশিনগান ব্যবহার করা হয়। হামলার সময় ওই এলাকায় বিজিবির চট্টগ্রামের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ আহম্মদ আলী, কক্সবাজারের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ফরিদ হাসানসহ বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবস্থান করছিলেন। নিখোঁজ নায়েক সুবেদার মিজানের লাশ নেয়ার জন্য নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে একটি কফিনও সীমান্তে নেয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার লাশ ফেরত না দিয়ে অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। দোছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহম্মদ জানান, পাইনছড়ি সীমান্তে গুলিবিনিময়ের পর আতঙ্কে ওই এলাকার আশপাশের পাড়ার লোকজন পালিয়ে গেছে। কক্সবাজার বিজিবির সেক্টরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গুলিবিনিময়ের কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর আচরণে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। বান্দরবানের পুলিশ সুপার দেবদাশ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বিজিবির পক্ষ থেকে তাদের বলা হয়েছে, মঙ্গলবার গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিখোঁজ নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তাকে সীমান্তের ওপারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে তার লাশ ফেরত দেয়ার কথা ছিল। এ সময় মিয়ানমারের পক্ষ থেকে প্রথম গুলিবর্ষণ করা হয়।



বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদ্য স্থাপিত পাইনছড়ি বিওপি ক্যাম্প থেকে গত বুধবার একদল বিজিবি সদস্য নিয়মিত টহলের উদ্দেশ্যে বের হয়ে দোছড়ি ও তেছড়ি খালের সংযোগস্থলে পৌঁছলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে বিজিপি তাদের লক্ষ্য করে ব্যাপক গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ সময় বিজিবি সদস্য ছোটাছুটি করে পালিয়ে গেলেও দায়িত্বরত নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে বিজিপি জাতিসঙ্ঘ কনভেনশন অমান্য করে বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় অনুপ্রবেশ করে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ তার লাশ নিয়ে যায়।



উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের শেষের দিকে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী তৎকালীন নাসাকা বাহিনী অতর্কিতভাবে ঘুমধুমের রেজু ফাত্রাঝিরি বিজিবি ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে এক বিজিবি সদস্যকে হত্যা করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনাকে পুঁজি করে মিয়ানমার থেকে প্রায় আড়াই লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের আবারো বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বারবার গুলিবর্ষণ করছে।



গতকাল শুক্রবার সকালে সীমান্ত এলাকা ঘুরে বিজিবি ও স্থানীয় গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের বাইশপারি ৪১ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘুমধুম বিজিবির সুবেদার সাহাব উদ্দিন জানান, সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণে সীমান্তের উভয় পাড় মানবশূন্য হয়ে পড়েছে। রেজু আমতলী ক্যাম্পের সুবেদার মো: সোহরাব হোসেন জানান, বিজিপির গুলিবর্ষণের পর থেকে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল শুক্রবার পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহত বিজিবির নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানের লাশ ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও বিকেল পর্যন্ত ফেরত দেয়নি।



কক্সবাজার ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, বুধবার পাইনছড়ি সীমান্ত এলাকায় গুলিবর্ষণের ঘটনার পর থেকে আমার নিয়ন্ত্রণাধীন ১৮ থেকে ৪০ নম্বর সীমান্ত পিলার পর্যন্ত সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং তাদেরকে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তিনি আরো জানান, মিয়ানমার আগে থেকে সীমান্তে অতিরিক্ত সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে। সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত দুই দেশের মধ্যে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে একটি বৈঠক আগামী ৩ জুন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।



নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবারও পাইনছড়ি সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমার বিজিপি সদস্যরা আবারো দফায় দফায় গুলিবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। যে কারণে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকায় যোগাযোগ করতে না পারায় বিস্তারিত জানানো সম্ভব হচ্ছে না। দৌছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ বলেন, পাইনছড়ি এলাকায় শুক্রবার বিজিপি আবারো গুলিবর্ষণ করায় সীমান্ত এলাকায় পূর্বনির্ধারিত পতাকা বৈঠক হয়নি। ফলে লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়াও স্থগিত হয়ে যায়।



মিজানুরের গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম



বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের পানছড়ি ৫২ নম্বর পিলার এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তরী বাহিনীর (বর্ডার গার্ড পুলিশ) সাথে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের গুলিবিনিময়ে নিহত বিজিবির নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে চলছে শোকের মাতম। মিজানকে হারিয়ে তার স্ত্রী-সন্তানরা এখন পাগলপ্রায়। নিহতের স্ত্রী রাবেয়া আকতার কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী যেন তার স্বামীর লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন। নিহত নায়েক মিজানুর রহমান কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর ইউপির ভৈষেরকুট-ভেলানগর গ্রামের মোল্লা বাড়ির শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স করপোরাল আব্দুল হাফিজের ছেলে। গতকাল বিকেলে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় গ্রামজুড়ে বিরাজ করছে শোকাবহ পরিবেশ। আশপাশের লোকজন ওই বাড়িতে ভিড় করছেন মিজানের পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে। কিন্তু তার বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও সন্তানদের কাছে যেই সান্ত্বনা দিতে যাচ্ছেন তাদের গগনবিদারী আর্তনাদে সেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তার মা রাবেয়া আক্তার ছেলের জন্য কাঁদতে কাঁদতে পাগলপ্রায়। স্ত্রী ও চার মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে হাবিবা (৪) এখনো জানে না, তার বাবা আর কখনো ফিরে আসবেন না। হাবিবাকে তার বাবার কথা জিজ্ঞেস করলে সে বলে আমার বাবা চাকরি করতে গেছেন।



নিহতের পরিবার জানায়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মায়ের গর্ভে মিজানকে রেখে তার বাবা যুদ্ধে শহীদ হন। তৎকালীন তার বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ল্যান্স করপোরাল পদে কর্মরত ছিলেন। এরপর মিজানের মাকে তার চাচা আবুল কাশেম বিয়ে করেন। তিনিও বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত নায়েক সুবেদার ছিলেন। মিজানুর রহমান ১৯৮৮ সালে চাকরিতে যোগ দেন। দুই মাস আগে লালমনিরহাট থেকে তাকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বদলি করা হয়। তিনি নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি ইউনিয়নের পানছড়ির বিজিবি ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন।



সূত্র মতে গত বুধবার সকালে নাই্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্তের ৫২ নম্বর পিলারের কাছে ৩১ বিজিবির একটি টহল দলকে লক্ষ্য করে মিয়ানমার সীমান্তরী বাহিনীর (বর্ডার গার্ড পুলিশ) সদস্যরা গুলিবর্ষণ করার পর তিনি নিখোঁজ হন। ঘটনার পর থেকে বিজিবি সদস্য নায়েক সুবেদার মিজানের ব্যবহৃত এলএমজি রাইফেল ও ১২০ রাউন্ড গুলিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি বিজিবির। এ ঘটনার পর নাই্যংছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।



বান্দরবানের দোছড়ি ইউনিয়নের ক্যাম্পের নিখোঁজ বিজিবির নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানকে নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার জের ধরে মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গতকাল সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী।



গতকাল বেলা আড়াইটায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের সীমান্তরী বাহিনী মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে গুলিবিনিময় শুরু হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ গুলিবিনিময় চলে।



জানা যায়, মিয়ানমারের সীমান্তরী বাহিনীর হাতে আটক বিজিবি সদস্য নায়েক মো: মিজানুর রহমানকে গতকাল ফেরত দেয়ার কথা ছিল। বিকেল ৩টায় একটি পতাকা বৈঠকও অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে জন্য নাই্যংছড়ি সীমান্তের পাইনছড়ি ৫২ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় অপো করছিলেন বিজিবির সদস্যরা। কিন্তু মিজানুর রহমানকে ফিরিয়ে না দিয়ে অতর্কিতে গুলিবর্ষণ করে মিয়ানমারের সীমান্তরী বাহিনীর সদস্যরা। পরে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়।

এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন নোমান বাংলানিউজকে বলেন, নাই্যংছড়ির ঘটনার পর থেকেই কূটনৈতিক চ্যানেলে মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ রেখেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।



এ দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শুক্রবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবারেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের জানা মতে, শুক্রবার পতাকা বৈঠক করে মিজানকে ফেরত দেয়ার কথা। কিন্তু বৈঠকটি না হয়ে গুলিবিনিয়ম হওয়া খুবই অনভিপ্রেত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি অতি গুরুত্বের সাথে দেখছে। কূটনৈতিক-পর্যায়ে আলোচনাও চলছে।



নিখোঁজ বিজিবি নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, সম্ভবত তিনি নিহত হয়েছেন।

অপর দিকে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানায়, বুধবার সকালে নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে নাই্যংছড়ির পানছড়ি বিওপির ২০ সদস্যের বিজিবির একটি দল ৫২ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছে যায়। সীমান্ত পিলারের কাছে পৌঁছামাত্র বিজিবি সদস্যদের ওপর নির্বিচারে গুলি ছুড়তে শুরু করে মিয়ানমারের সীমান্তরী বাহিনী মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ।



গুলি থামার পর থেকে নিখোঁজ হন বিজিবির সদস্য নায়েক মিজানুর রহমান।

মিজানকে আটক ও সীমান্তে নির্বিচারে গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মিউ মিন্ট থানকে বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়।



এ দিকে নিখোঁজ মিজানুর বেঁচে আছেন কিনা সে ব্যাপারে বিজিবির প থেকে কিছু জানা না গেলেও নাই্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।


Disclaimer:

This post might be introduced by another website. If this replication violates copyright policy in any way without attribution of its original copyright owner, please make a complain immediately to this site admin through Contact.



No comments:

Post a Comment