শুক্রবার ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস আন্ডার স্ক্রুটিনি ফর কিলিংস’ শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়, গত মাসে নারায়ণগঞ্জ থেকে সাতটি গলিত লাশ উদ্ধারের পর বিচার-বহির্ভূত হত্যায় র্যাবের ভূমিকা নজিরবিহীনভাবে স্পটলাইটে চলে এসেছে।
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই র্যাবের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো ভয়াবহ মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ তুলে আসছে। তবে এই প্রথমবারের মত বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাবের সিনিয়র কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিরোধী দল বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে র্যাব প্রতিষ্ঠা করলেও তারা এখন একে বিলুপ্ত করার দাবি জানাচ্ছে। ফলে এ বাহিনীর ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুরুর দিকে র্যাব এসব অভিযোগ (নারায়ণগঞ্জে সাত খুন) অস্বীকার করছিল। কিন্তু তার কয়েকদিনের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জের র্যাব কমান্ডার লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ এবং তার সহকর্মী মেজর আরিফ হোসেন এবং লে. কমান্ডার এসএম মাসুদ রানাকে প্রত্যাহার এবং পরে সশস্ত্র বাহিনী থেকে অবসরে পাঠানো হয়।
র্যাবের জবাবদিহিতার এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু এরপর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ র্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়। পরে তাদেরকে রিমান্ডেও নেয়া হয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান আলজাজিরাকে বলেন, ‘সেনা কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোয় মনে হচ্ছে প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এখন ফৌজদারি অপরাধের দায় থেকে তাদের রক্ষার আর কোনো উপায় নেই। শুধু সামরিক বাহিনীর লোক বলে তাদের কোনো বিশেষ সুবিধা দেয়া ঠিক হবে না।’ তবে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সাধারণ সম্পাদক আদিলুর রহমান খান বলেন, নারায়ণগঞ্জে নিহতরা আওয়ামী লীগের লোক বলে বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। তিনি বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে এ ধরণের হত্যার অনেক অভিযোগ এর আগেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তবে তারা বিরোধী দলের কর্মী বলে এর কোনো তদন্ত হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য এটা যে স্পর্শকাতর তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু শুধু এখানেই শেষ নয়। গ্রেপ্তারকৃত সেনাকর্মকর্তা তারেক সাঈদ মন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাই। বাংলাদেশের সংবাদপত্রে এসেছে যে র্যাব কর্মকর্তা ও (সাত খুনের প্রধান আসামী) নূর হোসেনের মধ্যে হত্যা নিয়ে যে আর্থিক চুক্তি হয় তা মায়ার ছেলে (দীপু চৌধুরী) জানতেন।
বাংলাদেশে রাজনীতি ও ব্যবসায় যে ক্রমেই দুর্বৃত্তায়িত হচ্ছে-এ ঘটনা তারই ভয়াবহ প্রতিফলন। এ ঘটনা নিয়ে এখন সবার দৃষ্টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে। কারণ, এ হত্যাকাণ্ডে তার দলের লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ আছে। র্যাবের বিরুদ্ধে আরো হত্যার যে অভিযোগ আছে, তিনি তার তদন্তের নির্দেশ দেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Disclaimer:
This post might be introduced by another website. If this replication violates copyright policy in any way without attribution of its original copyright owner, please make a complain immediately to this site admin through Contact.
No comments:
Post a Comment