মেসির ললনারা




চাঁদের কলঙ্ক আছে। মেসিরও আছে। নারী, মদ ও ড্যান্স তাকেও স্পর্শ করেছে। করেছে মানে খবর বা গুজব রটেছে। মেসির সব কিছুই যে খবরের আকর্ষণ হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। কারণ তিনি বিশ্বের হার্টথ্রব সুপারস্টারই নন, সবচেয়ে ধনাঢ্য ফুটবলারও। এক সিজনে মেসির আয় সাড়ে ১২ মিলিয়ন পাউন্ড। বছরে আরও ১৩ মিলিয়ন পাউন্ড তিনি পান অ্যাডিডাস, পেপসি ও অন্যদের তরফে। অনেকে মেসিকে বলেন তিনি ফুটবলের সর্বকালের সেরা। ২০১২ সালে তিনি তার দেশ ও ক্লাবের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৬ গোল করেছিলেন। তাই মেসি জাদু কেবল মাঠেই নয়, তার আকর্ষণ বাইরেও।

যেমন তার সাবেক বান্ধবী মাকারেনা লোমেস। তিন বছর আগে তিনি বোমা ফাটালেন এই বলে যে, তার বয়স যখন ১৪ আর মেসির বয়স ১৮, তখন মেসির সঙ্গে তার প্রণয় ঘটেছিল।

তবে এর ইতি ঘটে তিক্ততায়। মায়ের সঙ্গে তিনি শপিং করছিলেন। হঠাৎ খেয়াল হলো এক জোড়া অচেনা বাবা-মা তার পিছু নিয়েছেন। তারা এমনকি তার ছবিও তুলছিলেন। টের পেয়ে তিনি ঘুরে দাঁড়ান। 

চ্যালেঞ্জ করেন। তখন মাকারেনা দাঁড়িয়েছিলেন একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগে। আচানক তিনি দেখলেন ভদ্রমহিলা ছবি তোলা বাদ দিয়ে তার দিকেই তেড়ে আসছেন। তার হাতে একটি টেলিফোন সেট ও খুন্তি ‘ফ্রাই প্যান’। ভীত ম্যাকারেনা তখন পালানোর পথ খুঁজছেন।

তারা বিশ্বনন্দিত লিওনেল মেসির বাবা-মা। টেলিনোচকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সেদিনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে মেসির সাবেক বান্ধবী বললেন, তারা এক পর্যায়ে আমাকে বিদ্রূপ ও অপমান করা শুরু করলেন। তারা ভেবেছিলেন আমি বুঝি উপযাচক হয়ে তাদের ছেলের বাহুলগ্না হয়েছিলাম। মেসির সঙ্গে রাত কাটিয়েছি বলেও তারা সন্দেহ করেছিলেন। আরও বড় ব্যাপার, কোন কারণে তাদের ধারণা হয়েছিল, আমি বুঝি মেসির সঙ্গে আমার প্রণয় নিয়ে কোন ম্যাগাজিনকে সাক্ষাৎকার দিয়েছি। আসলে এসব কিছুই নয়। আমি কখনও এই স্বল্পমেয়াদি ডেটিং সম্পর্কে কোথাও মুখ খুলিনি। আমাদের মধ্যে কি হয়েছিল, তা আমি কখনও কারও কাছে বলিনি। খুন্তি নিয়ে তাড়া খাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল রোববারের এক অপরাহ্ণে। আমার স্মৃতিতে তা আজও দাগ কেটে আছে। এটা আমার প্রাপ্য ছিল না। আমাকে তাই সেটা আহত করেছিল। মেসির তখন বডিগার্ড ছিল। আমার ছিল না। আমি সাধারণ মানুষের মতোই রাস্তায় বেরিয়েছি। মানুষের সঙ্গে মিশেছি।

তবে এই তিক্ত স্মৃতি সত্ত্বেও মাকারেনার অভিপ্রায় হলো, সুযোগ পেলে অন্তত একটি রাত বিশ্বের এই শ্রেষ্ঠ তারকা ফুটবলারের সঙ্গে কাটানো। তিনি স্বীকার করেন, বিষয়টি তার জন্য আজও এক অসমাপ্ত অধ্যায় রয়ে গেছে।

২০১১ সালের অক্টোবরে একটি ‘হু অ্যাট অল দ্য পাইজ’। এটি দক্ষিণ আমেরিকার টেস্টি ফুটবল ম্যাগাজিন। স্ক্যান্ডাল! লিওনেল মেসি ও মিলিতো ব্রাদার্স আর্জেন্টিনার একটি সেক্স অ্যান্ড অ্যালকোহল পার্টিতে হাজির হয়েছিলেন। সেখানে যা ঘটেছিল তার বিবরণ প্রথম প্রকাশ করেছিল ইতালির ট্যাবলয়েড কোরিওদেল্লো স্পোর্ট নামের একটি সাময়িকী। জোয়ানা গঞ্জালেজ আর্জেন্টাইন খোলামেলা টিভি স্টার। তিনিই ওই পার্টির আয়োজক ছিলেন। সে রাতে আমেরিকার আরও কিছু সেক্স সিম্বল তাতে অংশ নিয়েছিলেন। মেসি পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে জেরবার হন। বলেন, ‘আমরা ড্যান্স করেছিলাম। পরে কিছু প্লেস্টেশন বাজিয়েছিলাম মাত্র।’ খবরটি দিয়ে ইতালির ওই পত্রিকা কভার পেজের প্রথম শিরোনাম তৈরি করেছিল।

গত ১৪ই অক্টোবর এফটিভিপ্রোডটকম খবর দিয়েছিল যে, প্যারাগুয়ের সুপার মডেল রিকুয়েম দাবি করেছেন লিওনেল মেসি তাকে অর্থের বিনিময়ে কামনা করেছিলেন। ফুটবল দুনিয়ায় তুফান বয়ে গিয়েছিল। অবশ্য তা তেমন কল্কে পায়নি। কারণ ওই সুপার মডেল হৈচৈ ফেলে দিতে সিদ্ধহস্ত। ২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে তিনি ঘোষণা দেন, প্যারাগুয়ে যদি কাপ জেতে তাহলে তিনি নগ্ন হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন। প্যারাগুয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যায়ে ইতিহাসের প্রথমবারের মতো কোয়ালিফাই করায় তার তারকাখ্যাতি ধেই ধেই করে উপরে উঠলো। তার খেতাব হলো ‘ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ব্রাইড।’

চিলির একটি টিভি অনুষ্ঠানে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেসি সম্পর্কে রিকুয়েম ওই তথ্য প্রকাশ করলে আলোড়ন ওঠে। তেরোপেডোরস প্রোগ্রামে তিনি যখন ওই বক্তব্য রাখছিলেন তখন ছিলেন রক্তিম ও লজ্জাবনত। তিনি প্রথমে নামটি বলেননি। বলেছিলেন, এক বিশ্বখ্যাত ফুটবল তারকা তাকে অর্থের বিনিময়ে শয্যায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। উপস্থাপক যখন তাকে নাম প্রকাশের জন্য পীড়াপীড়ি করছিল তখনও সে নীরব থাকে। হঠাৎ টিভির ভেতর থেকে শ্রোতারা অন্য কারও কণ্ঠ শুনতে পান। ‘লিওনেল মেসি, লিওনেল মেসি।’ সুপারমডেল তখন সম্মতিসূচক মাথা নাড়েন। তিনি সরাসরি মেসির নামটি নেননি। জন অ্যান্ড্রজ মন্তব্য করেছিলেন দেখাই যাক ২০১৪ সালের বিশ্বকাপকে সামনে রেখে মেসি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন কিনা। ইন্টারনেট ঘেঁটেও অবশ্য এর কোন হদিস মেলেনি।  

নারী ছাড়াও অন্য অনেক বিখ্যাতের মতো করফাঁকির অভিযোগও তাকে তাড়া করেছিল। গত জুনেই খবর বেরিয়েছিল মেসি তিন বছর ধরে চার মিলিয়ন পাউন্ড কর ফাঁকি দিয়েছেন। অভিযোগ করা হয়েছে, মেসির ইমেজ রাইটস বিক্রয়লব্ধ আয়ের কর ফাঁকি দেয়া হয়েছে। মেসি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গত জুলাইয়ের ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড মিরর খবর দিলো মেসিকে মার্কিন জুয়াস্বর্গ লাস ভেগাসে এক নর্তকীর সঙ্গে পোজ দিয়েছেন। অবশ্য তারা সে খবরটির বরাত দিয়েছিল আর্জেন্টিনার প্রোন্টো ম্যাগাজিনের। লাস ভেগাসের নাইটক্লাবে তাকে ওই স্বর্ণকেশী ললনার বুকের দিকে চোখ রেখে হাত দিয়ে তার কোমর জড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সপ্তাহে আড়াই লাখ পাউন্ডের এই ফুটবল স্টারকে নিয়ে প্রকাশিত খবরের শিরোনাম ছিল ‘দ্য ফটো দ্যাট পুটস লিওনেস মেসি’চ ম্যারেজ অ্যাট রিস্ক।’ ওই ছবি তার বিয়েটা ঝুঁকিতে ফেলবে একথা বলার কারণ ছিল যে, তার আগের বছরেই মেসি পিতা হয়েছিলেন।

এমনকি দাবি করা হয়েছিল যে, ওই ছবি দেখার পরে ২৫ বছর বয়সী তার বান্ধবী  রাকুজ্জোর সঙ্গে তার আলোচনা সঙ্কটে পড়েছিল। ‘কারণ সে ভেবেছে মেসি তাকে ওই নারীর কাছে খাটো করেছে। এ জন্য মেসি রেড কার্ড পাবেন কিনা সেটা পরে দেখা যাবে কিন্তু আপাতত সোফা বদল ঘটেছে। ম্যাগাজিনটি ওই ছবি ছেপে তার নিচে শিরোনাম করেছিল, লিও ও অ্যান্টোলেনা, পুত্র থিয়াগোর মা তাদের দাম্পত্যের কঠিন সময় অতিক্রম করছেন।

ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনাল্ডোর আমন্ত্রণে মেসি লাস ভেগাসে গিয়েছিলেন। অ্যান্টোলেনাকে মেসি জানেন তার ৫ বছর বয়স থেকে। কিন্তু ২০০৯ সালের আগে তাদের মধ্যে প্রণয়ঘটিত অনুরাগ দেখা যায়নি। গত নভেম্বরে টুইটারে অ্যান্টেলোনা তার পুত্র সন্তান প্রসবের খবর দিয়েছিলেন। আর লাস ভেগাসের মন্দ খবরটি ছাপা হয়েছিল এমন এক সময়ে যখন মেসি ও তার পিতা জর্জ হোরাসিও ৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন পাউন্ডের ট্যাক্স ফাঁকির দায়ে মিডিয়ায় আলোচিত ছিলেন।




Disclaimer:

This post might be introduced by another website. If this replication violates copyright policy in any way without attribution of its original copyright owner, please make a complain immediately to this site admin through Contact.

No comments:

Post a Comment